প্রকাশিত সময় : জুন, ৪, ২০২০, ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ
পাঠক দেখেছেন 686 জনসারাদেশে বেড়েই চলেছে ভুট্টার উৎপাদন। মাঠের পর মাঠ সবুজ পাতার আড়ালে হাসছে হলুদ রঙের ভুট্টার মোচা (ফল)। ভুট্টা উৎপাদন ও বিক্রি করে কৃষক খুব খুশি। উৎপাদনে ধানের চেয়ে ভুট্টার খরচ কম হওয়ায় অনেক কৃষক ভুট্টার চাষের দিকে ঝুঁকছেন। ধানের চেয়ে ভুট্টা চাষে দ্বিগুণ লাভ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
ভুট্টা উৎপাদন ও গবেষণার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, এবার ভুট্টা উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে তা ছাড়িয়ে যাবে। কারণ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার ভুট্টা চাষে অনেক কৃষককে প্রণোদনা দিচ্ছে। এছাড়া মাঠ প্রদর্শনী বাবদও অনেক কৃষক প্রণোদনা পাচ্ছেন। দেশের অধিকাংশ উপজেলায় ৭০০ থেকে ৮০০ জন ভুট্টা চাষিকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। প্রণোদনার আওতায় প্রত্যেক চাষিকে দুই কেজি করে ভুট্টার বীজ, ২০ কেজি ডিএপি (ড্যাপ সার) ও ১০ কেজি এমওপি (পটাশ) সার বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে। রাজস্ব খাত থেকেও এনএটিপি (ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রজেক্ট) প্রকল্পের আওতায় অনেকে ভুট্টার ওপর প্রদর্শনী প্লট পেয়েছেন। এসব কৃষকের প্রত্যককে নগদ দেড় হাজার টাকাসহ সার, কীটনাশক, সাইনবোর্ড বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে।
বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার চরপাড়া গ্রামের কৃষক আকিমুদ্দিন শেখ এবার ১০ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। গত আমনের সিজনে ধানের দাম কম পাওয়ায় এবার বোরো ধান আবাদ না করে তিনি ভুট্টার চাষ করেছেন। ১০ বিঘা জমিতে তার ৪২০ মন ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে। প্রতি মণ ভুট্টা (কাঁচা) খোলা থেকেই ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি করে দিয়েছেন। প্রতিবিঘা জমিতে তার উৎপাদন খরচ হয়েছে গড়ে ৯ হাজার টাকা। মোট খরচ হয়েছে ৯০ হাজার টাকা। ৪২০ মণ ভুট্টা বিক্রি করে তিনি এক লাখ ৪১ হাজার টাকা নিট প্রফিট করেছেন।
কৃষক আকিমুদ্দিন শেখ বলেন, এখন থেকে আর ধান আবাদ করব না। শুধু বছরে খাওয়ার জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু করব। ভুট্টা, পাট, মরিচ ও সবজিসহ অন্যান্য ফসল চাষ করব। তিনি বলেন, ধান এক হাজার টাকা মণ বিক্রি করলেও ধানের চেয়ে ভুট্টায় দ্বিগুণ লাভ। তিনি হিসাব করে বলেন, এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন খরচ ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। ধান উৎপাদন হবে ২০ মণ। এক হাজার টাকা মণ দরেও ধান বিক্রি করলে এক বিঘা জমিতে ৫-৬ হাজার টাকার বেশি লাভ হবে না।
তিনি বলেন, ‘এবার এক বিঘা জমিতে আমার ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে ৪২ মণ। প্রতি মণ ৫৫০ টাকা দরে এসেছে ২৩ হাজার ১০০ টাকা। উৎপাদন খরচ ৯ হাজার টাকা বাদ দিলে প্রতি বিঘায় আমার ১৪ হাজার ১০০ টাকা লাভ হয়েছে। যা ধানের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। এ কারণে ধান উৎপাদনের দিকে আমার আর ঝোঁক নেই।
সূত্র.জাগোনিউজ
Facebook Comments