প্রকাশিত সময় : জুন, ৪, ২০২০, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
পাঠক দেখেছেন 631 জনপাহাড়ে এবার লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। স্থানীয় বাজার ছাড়াও এই লিচু বিক্রি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
প্রতিদিন বিভিন্ন উপজেলা থেকে লিচু নিয়ে কৃষকরা রাঙামাটি শহরের সমতাঘাট, তবলছড়ি, পৌরসভা ট্রাক টার্মিনাল ও রির্জাভ বাজার নিয়ে আসেন। সেখান থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা কিনে জেলার বাইরে নিয়ে যান।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছর রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় ১৮৮২ হেক্টর জমিতে ১৫ হাজার ৯৯৭ মেট্রিক টন লিচু হয়েছে। হেক্টর প্রতি লিচু হয়েছে ৮.৫ মেট্রিক টন। রাঙামাটির বাজারে দেশিয় লিচু, চায়না-২, চায়না-৩ লিচু পাওয়া যাচ্ছে। ১০০ দেশি লিচু পাওয়া যাচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। এছাড়া, চায়না-২ প্রতি শত লিচু ১০০-১৫০ টাকায় ও চায়না-৩ লিচু ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাঙামাটির লংগদু, নানিয়ারচর ও সদর উপজেলায় লিচুর ফলন সবচেয়ে ভালো হয়েছে।
এদিকে, শহরের সমতাঘাটে লিচু বিক্রি করতে আসা ভরত চাকমা বলেন, ‘গত বছর ৫০টি দেশি লিচু বিক্রয় করেছি ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। কিন্তু এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে তা বিক্রি করতে হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।’
রাঙামাটি সদর উপজেলার মগবান ইউনিয়নের গোরকাবাছড়া গ্রামের লিচু চাষি সুমেধ চাকমা বলেন, ‘আমার বাগানে এবার লিচু ফলনও ভালো হয়েছে কিন্তু করোনার কারণে দাম অনেক কম। আমি ১৫টি গাছের লিচু বিক্রি করেছি মাত্র ৪৫ হাজার টাকায়।’
রাঙামাটি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আপ্রু মারমা জানিয়েছেন, সদর উপজেলায় ২০৫ হেক্টর জমিতে ৫১২ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করছি, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি লিচু উৎপাদন হবে।
তিনি বলেন, ‘লিচু একটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। বর্তমানে করোনার জন্য ভিটামিন সি খুবই প্রয়োজন। তাই বাজারে লিচুর চাহিদাও বেশি।’
রাঙামাটির লিচু চাষিরা জানিয়েছেন, প্রযুক্তিগত চাষাবাদে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও উপকরণ সহায়তা পাওয়ায় এ বছর রাঙামাটিতে লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। এ মৌসুমি ফল স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে বাজারজাত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। প্রতিদিন নৌ ও সড়কপথে পরিবহন করা হচ্ছে এসব পণ্য।
শহরের বনরুপা বাজারের মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম জানান, এ বছর লিচুর ফলন অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশী হলেও করোনাভাইরাসের কারণে পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় লাভ কম হচ্ছে। বাজারজাতকরণ সুবিধাসহ হিমায়িত গুদামের অভাবে দ্রুত পচনশীল এ ফল সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও সংরক্ষণ সম্ভব হয়ে ওঠে না। কৃষকরা এক শ্রেণির ফঁড়িয়া ও সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীদের কাছে ঠকছেন। বাধ্য হয়ে কম দামে লিচু বিক্রি করতে হয় তাদের।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক পবন কুমার চাকমা বলেন, ‘লিচুর এবার ফলন ভালো হয়েছে। দ্রুত পচনশীল এ ফলের জন্য আসলে হিমাগার প্রয়োজন। হিমাগার স্থাপন করা গেলে কৃষক লাভোবান হবেন।
সূত্র.রাইজিংবিডি
Facebook Comments