সোমবার (২০ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিরকুটের কথা নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানা পুলিশ। এর আগে বিকালে আশুলিয়ার নরসিংহপুর ইউসুফ মার্কেট এলাকার রেজাউল করিমের মালিকানাধীন বাড়ির একটি কক্ষ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন, পটুয়াখালী সদর থানার লোহালিয়া ইউনিয়নের হাকিম আলী হাওলাদারের ছেলে রুহুল আমিন হাওলাদার এবং বরিশালের আমতলী থানার সোবহান মৃধার মেয়ে মনি ওরফে মনিরা।
বুক পকেটে রাখা চিরকুটে রুহুল আমিন লিখেছেন, ‘‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। আমি মো রুহুল আমিন, থানা পটুয়াখালী ও জেলা পটুয়াখালী। অতি কষ্টের সাথে জানাই- আমতলি নিবাসী ও বাওনা গ্রাম মো. ছোবাহান মৃধার ছোট মেয়ে মনিরার সাথে আমার বিবাহ হয়। বিবাহের বয়স ৭ মাস। বিয়ের রাত থেকে মনিরার ফোনে ফোন আসতে থাকে। এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জানতে পারি ডিসার সুয়েটারে মনিরা ও তার বড় বোন ফাহিমা চাকুরি অবস্থায় বিভিন্ন ছেলের সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয় দুই বোন। আমি বাঁধা দিলে তার বোন ফাহিমা বাসায় ডেকে নিয়ে আমাকে ভয় দেখায় যে এই নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তোকে মেরে ফেলব। ফাহিমার স্বামীও জেনে ফাহিমাকে ছেড়ে দিয়েছে। তারা অনৈতিক কাজ করে টাকা কামাই করে, চাকুরি তাদের শো। এবং আমাকে ভয় দেখিয়ে ইউসুফ মার্কেট কাপড়ের দোকান দিতে বাধ্য করায় সেখানে আমার ছয় লক্ষ টাকা নষ্ট করে। আর আমাকে ভয় দেখিয়ে দুই বোন অনৈতিক কাজ করে পরে আমি জানতে পারি মনিরার আরও ২ টা বিয়ে হয়েছে, সেখান থেকে মনিরার ছাড়াছাড়ি হয়। তা আমার কাছে গোপন রাখে, পরে আমি জানতে পারি। ফাহিমার কাছে আমি ২,৫০,০০০ টাকা ধার হিসেবে পাওনা আছি। টাকা চাইতে গেলে আমাকে বাসায় ডেকে নিয়ে অপমান করে এবং তার বোনকে আটকিয়ে রাখে। আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী ফাহিমা, ফাহিমা।
ইতি, মৃত্যু পথের পথিক। আমাকে সবাই ক্ষমা করে দিবেন।’’
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঘরের দরজার সামনে গ্রিলের আরেকটি গেট ছিল। ঘরের দরজা খোলা থাকলেও গ্রিলে তালা লাগানো ছিল। বাইরে থেকে ডেকেও কোনো সাড়া না পেয়ে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ গিয়ে গ্রিলের তালা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে পুলিশ। পরে সেই ঘর থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বাড়ির মালিক রেহানা আক্তার জানান, সকাল থেকে তাদের কোনো সাড়া না পেয়ে সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পরে দেখি বিছানায় মনির মরদেহ পড়ে আছে এবং সিলিং এর সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছে রুহুল আমিন।
আশুলিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে স্ত্রীকে হত্যা করেই আত্মহত্যা করেছেন স্বামী। স্বামীর বুক পকেট থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি।
Facebook Comments