প্রকাশিত সময় : জানুয়ারি, ৩, ২০২২, ১২:০২ অপরাহ্ণ
পাঠক দেখেছেন 625 জনউত্তরের জেলা দিনাজপুরে শীতের প্রকোপ বেড়েছে। নতুন বছরের শুরুতেই তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে তেমন বাইরে বের হচ্ছেন না। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কমলেও বাতাসের কারণে দুর্ভোগে অসহায় ছিন্নমূল মানুষ।
দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৩ জানুয়ারি) দিনাজপুরে সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ। তবে আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নওগাঁ জেলার বদলগাছিতে। সেখানে ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে।
সোমবার সকালে হিলি বন্দরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, হাড়কাপানো শীতের কারণে শহরে লোকজন অনেকটাই কম। তবে দিনমজুর, রিকশা-ভ্যান চালকসহ নিম্ন আয়ের মানুষরা জুবুথুবু হয়ে বসে আছেন। আবার কোথাও কোথাও আগুন জ্বালিয়ে জটলা বেঁধে অনেকেই শীতকে প্রতিহত করার চেষ্টা করছেন।
এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে জেলার বিভিন্ন সড়কে চলাচলরত যানবাহন সমূহকে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা গেছে।
হিলি চারমাথা মোড়ে শীতে জুবুথুবু হয়ে রিকশায় বসে থাকা বৃদ্ধ কফিল উদ্দিন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘শীতে অনেক কষ্ট পাচ্ছি বাবা, কিন্তু কি করবো, পেট তো আর শীত বুঝে না? সংসারের তো চাহিদা পূরণ করতে হবে, ঘরে থাকলে তো আর পেট চলবে না?’
কাজের সন্ধানে আসা আতিয়ার রহমান নামে এক দিনমজুর বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে হিলি বাজারে আসি। বাড়িতে দুই মেয়ে আর এক ছেলে আছে। পাঁচ জনের সংসার। কাজ না করলে খাবো কি? বাধ্য হয়ে তাই শীতের সকালে বাজারে আসতে হল যদি কেউ কাজ দেয়।’
দিনাজপুরগামী বাসচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঠান্ডা বাতাস, শীত ও কুয়াশার তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আজকে মনে হচ্ছে শীতের তীব্রতা বেশি। ঠান্ডায় হাত-পা বরফ হয়ে যাচ্ছে। ঘন কুয়াশা থাকায় হেড লাইট জ্বালিয়ে তাই গাড়ি চালাচ্ছি।’
দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, সোমবার সকাল ৬ টায় দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার। তবে বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৪ কিলোমিটার পযর্ন্ত উন্নীত হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, সোমবার রংপুরে ১২.৫ ডিগ্রি, ডিমলায় ১২.৫ ডিগ্রি, রাজারহাটে ১২ ডিগ্রি, রাজশাহীতে ১১.৫ ডিগ্রি, শ্রীমঙ্গলে ১০.৯ ডিগ্রি, তেতুলিয়ায় ১১ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
হাকিমপুর (হিলি) উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নুর-এ আলম বলেন, ‘কয়েক দিনের তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমরা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছি। উপজেলার তিনটি ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এতিমখানা ও মাদরাসায় শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় এক হাজার কম্বল দিয়েছি। আমাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
Facebook Comments