শিরোনাম
  ইজতেমায় মােনাজাত শেষে পানি ও স্যালাইন বিতরণ করেন আল কারিম ব্লাড ডোনেশন ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন       আশুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত চারজনের লাশ তুলে ময়নাতদন্ত       আশুলিয়ার চকে ফসলী জমি ও নদীর কুল কেটে সাপার       ইজতেমায় মুসল্লিদের জন্য মেডিকেল সেবা, পানি, শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হবে:এম মঞ্জুরুল করিম রনি       আশুলিয়ার বাইপাইলে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার       সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্র মেরামত করতে হবে” এম মঞ্জুরুল করিম রনি       টঙ্গীতে এক সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম       শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা উত্তর ৫৪ নং ওয়ার্ডে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতর       বেক্সিমকোর শ্রমিকদের বিক্ষোভ: তিন মামলায় আসামি ৫ হাজার ছাড়িয়ে       আরাফাত রহমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকীতে ৫২ নং ওয়ার্ড বিএনপির দোয়া মাহফিল    
৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রকাশিত সময় : নভেম্বর, ২৩, ২০২১, ০৬:৫৫ অপরাহ্ণ

পাঠক দেখেছেন 1017 জন
 

সাভার প্রতিনিধি : ২৪শে নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ডের ৯বছর পূর্ণ হবে। ২০১২ সালের ২৪শে নভেম্বর সেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড কেড়ে নেয় ১১৩জন শ্রমিকের প্রাণ। পঙ্গু হয়ে সংসারের বোঝা হয়েছেন কয়েক’শ শ্রমিক। যারা এখনো ভুলতে পারেন না দুর্বিষহ সেই স্মৃতি।

তাজরীন ফ্যাশন নামের আটতলা পোশাক কারখানাটি ৯বছর ধরে নিশ্চিন্তপুরবাসীর কাছে বধ্যভূমি হয়ে আছে। আগুনে আটতলা ভবনটির প্রায় সব মালামাল পুড়ে যায়। যার চিহ্ন এখনো রয়েছে ভবনটির গায়ে। মালামালের সঙ্গে পুড়ে যায় সেখানে কর্মরত অধিকাংশ শ্রমিক ও তাদের স্বজনদের স্বপ্ন।

সংসারে সচ্ছলতা আনতে গিয়ে ওই পোশাক কারখানায় যারা কাজ করছিলেন, তারা উল্টো সংসারের বোঝায় পরিণত হয়েছেন। সব হারিয়ে গত ৯বছরে নিশ্চিন্তপুর ছেড়ে চলে গেছেন প্রায় সব শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। কেউবা সেখানে থেকে আশপাশের পোশাক কারখানায় কাজ নিয়েছেন। কিন্তু অন্য শ্রমিকদের মতো স্বাভাবিক কাজের মানসিকতা আজও ফিরে পাননি তারা। এক অজানা আতঙ্ক এখনো তাদের পিছু তাড়া করছে।

অগ্নীকান্ডে আহত জরিনা বেগম (২৬) নামের এক শ্রমিক আগুনের হাত থেকে বাঁচতে পাঁচতলা থেকে মাটিতে লাফিয়ে পড়েছিলেন। এখন স্থানীয় অন্য একটি কারখানায় কাজ করছেন। কিন্তু সেই দুর্বিষহ স্মৃতি আজও ভুলতে পারেননি তিনি। জরিনা বেগম বলেন, ‘দগ দগ কইরা আগুন জ্বলছিল। সিঁড়ি দিয়ে নামতে যাইয়্যা দেখি তালা দেওয়া। উপায় না পাইয়া পাঁচতলা থেইকা লাইফা পড়ি। তারপর আর কইতে পারি না।’

জরিনার ক্ষোভ, প্রথমে আগুনের বিষয়টি বুঝতে পেরে শ্রমিকরা বের হতে চাইলে মালিকপক্ষের লোকেরা একে গুজব বলে শ্রমিকদের কাজ করতে বলেন। এমনকি, শ্রমিকরা যেন বের হতে না পারে, সে জন্য কারখানার সিঁড়ির প্রধান ফঁটকেও তালা ঝুঁলিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। এর ফলেই এত প্রাণহানি ঘটে।

ঘটনার পর বিভিন্ন তদন্ত কমিটির অনুসন্ধানেও প্রাণহানির জন্য কারখানার মালিকপক্ষকে দায়ী করা হয়। ইনস্যুরেন্সের টাকা আদায়ের জন্য মালিকের নির্দেশে ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ তোলে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। এ ঘটনায় সে সময় দুটি মামলা হয়। যাতে তাজরীন ফ্যাশনের মালিক দেলোয়ার হোসেন গ্রেপ্তার হন। তবে বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। মামলা দুটির তদন্ত এবং বিচারে ধীরগতির কারণে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা যাবে কি না, সেই বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

আশুলিয়ার শ্রমিক নেতা মিজানুর রহমান বলেন, তাজরীন ফ্যাশনের ট্রাজেডির দীর্ঘ ৯বছর অতিবাহিত হলেও আজও পর্যন্ত মালিক দেলোয়ারের সুষ্ঠ বিচার হয়নি। সে গ্রেফতার হলেও জামিনে বের হয়ে মহাসুখে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ অনেক হতাহত শ্রমিকরা এখনও মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। বর্তমানে যে সব শ্রমিকরা বিকলাঙ্গভাবে জীবন-যাপন করছে তাদের জন্য তাজরীন ফ্যাশনের পরিত্যক্ত ভবনটিতে বসবাসের সুযোগ করে দিলে তাহলে তারা একটু হলেও মনে প্রশান্তি পাবে বলেও এই শ্রমিক নেতা আশাবাদ ব্যাক্ত করেন ।

অন্যদিকে এ বিষয়ে টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স  ফেডারেশনের গাজীপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডলী আহমেদ (রেহানা) বলেন, তোবা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান তাজরিন ফ্যাশনের মালিক দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে সুপরিকল্পিতভাবে কারখানায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। এঘটনায় ১১৪জন শ্রমিক অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু বরণ করেন। এই হত্যাযজ্ঞের কর্মকাণ্ডের মূলহোতা কারখানার মালিক দেলোয়ার হোসেনসহ দোষীদের এখন পর্যন্ত শাস্তি হয়নি। নিহত শ্রমিকের পরিবার ও আহত শ্রমিকরা সম্মানজনক ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা পয়সাও পায়নি। আর্থিক ক্ষতিপূরণ, পূর্ণবাসন ও সুচিকিৎসার অভাবে শ্রমিকরা এখনও মানবেতর জীবন-যাপন করছে। এবিষয়ে সরকারের নজর থাকলেও কোনো প্রকার শ্রমিকদের সহায়তা করছে না। কারখানার মালিক গ্রেপ্তার হয়েছিলো বটে নামমাত্র কিন্তুু জামিনে বের হয়ে শরীরে হাওয়া লাগিয়ে ঠিকই ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই হত্যাকারীদের যথাযথ শাস্তির আওতায় আনাসহ নিহতের পরিবার ও আহতদেরকে পুর্নবাসন এবং আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে জোর দাবী জানাচ্ছি।

২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর তুবা গ্রুপের মালিকানাধীন তাজরীন ফ্যাশনস লিমিটেডে অগ্নিকাণ্ডে সরকারি হিসাবে প্রাণ হারান ১১১জন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরো দুজন। বহু শ্রমিক জীবন বাঁচাতে ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন মাটিতে। তাদের অনেককে বিকলাঙ্গ জীবন যাপন করতে হচ্ছে।

শেয়ার করুন

Facebook Comments

     

আরও পড়ুন

ইজতেমায় মােনাজাত শেষে পানি ও স্যালাইন বিতরণ করেন আল কারিম ব্লাড ডোনেশন ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন

আশুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত চারজনের লাশ তুলে ময়নাতদন্ত

আশুলিয়ার চকে ফসলী জমি ও নদীর কুল কেটে সাপার

ইজতেমায় মুসল্লিদের জন্য মেডিকেল সেবা, পানি, শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হবে:এম মঞ্জুরুল করিম রনি

আশুলিয়ার বাইপাইলে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্র মেরামত করতে হবে” এম মঞ্জুরুল করিম রনি

টঙ্গীতে এক সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা উত্তর ৫৪ নং ওয়ার্ডে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতর

বেক্সিমকোর শ্রমিকদের বিক্ষোভ: তিন মামলায় আসামি ৫ হাজার ছাড়িয়ে

আরাফাত রহমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকীতে ৫২ নং ওয়ার্ড বিএনপির দোয়া মাহফিল

পোশাক শ্রমিকদের হঠাৎ বাড়ি ফেরার হিড়িক

ফেরদৌস আক্তার রুনা, রচিত ( কাপুরুষ )

কথা রাখলেন না গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ, চাকরিচ্যুত শ্রমিক-দম্পতি

বিজিএমইএ সভাপতি কতৃক শ্রমিক ছাটাই ঘোষণার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে

বিজিএমইএ’র অনুরোধ রাখলো না সাভারের অনেক পোশাক কারখানা!

ট্রাকে ঈদযাত্রা: ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় গার্মেন্টসকর্মী মৌসুমীকে

কবিতাঃ”হিজুলীর ফুয়াদ চাচা” কবি মোঃ আব্দুল হামিদ

সাভারে পোশাক শ্রমিকদের ঢিলেঢালা ঈদ উৎযাপন

৯০ এর রাজপথ কাপানো জাসদ নেতা হান্নান ক্যান্সারে আক্রান্ত

পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন  তুরাগ থানা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাসির উদ্দিন

 

Top