প্রকাশিত সময় : এপ্রিল, ২৫, ২০২০, ০৪:০৮ অপরাহ্ণ
পাঠক দেখেছেন 617 জন
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে মরা গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার (২০ এপ্রিল) রাতে ধনবাড়ী পৌর শহরের বনিচন্দ বাড়ী গ্রামের ফেরদৌস মিয়া ও সাঈদ মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে মরা গরু জবাই করে মাংস বিক্রির ঘটন প্রকাশ পেলে উপজেলায় ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটিয়েছেন ধনবাড়ী পৌর শহরের বন্দ টাকুরিয়া গ্রামের রেজাউল হকের ছেলে সুজন মিয়া, নূরুল ইসলামের ছেলে রুবেল মিয়া, বাদশা মিয়ার ছেলে লিটু মিয়া এবং কিতাব আলীর ছেলে সাইদুর রহমান।
গরুর মালিক লেবু মিয়া জানান, ‘সোমবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় আমার একটি ৯০ থেকে ৯৫ হাজার টাকার মূল্যের গরু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। গরুর অসুস্থতা দেখে ধনবাড়ী বাজার থেকে ঔষধ এনে চিকিৎসা দেয়া হয়। ওই দিনই রাত ১০ টায় গরুটি মারা যায়। গরু মরার খবর পেয়ে পাশ্ববর্তী বাড়ির গরু ব্যবসায়ী সুজন মিয়া, রুবেল মিয়া, লিটু মিয়া ও সাইদুর রহমান আমার বাড়িতে আসেন। তাঁরা গরুটি ভ্যানে করে দূরে কোথাও মাটিতে পুঁতে রাখার কথা বলে আমার কাছ থেকে নিয়ে যায়। আমি তাদের ভ্যান ভাড়া বাবাদ দেড়শ টাকা দেই। তাঁরা গরুটি মাটিতে না পুঁতে পাশ্ববর্তী বনিচন্দ বাড়ি গ্রামের ফেরদৌর মিয়া ও সাঈদ মিয়ার বাড়িতে নিয়ে রাতেই জবাই করে প্রতি কেজি মাংস ২০০ টাকা দরে এলাকাবাসীকে খবর দিয়ে বিক্রি করেন।’
শুক্রবার বিকেলে ঘটনাটি প্রকাশ পেলে পুরো উপজেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী মরা গরু বিক্রিকারীদের বিচার দাবিতে ধনবাড়ী কেরামজানী সড়কের টাকুরিয়া-বান্দ সড়ক অরবোধ করে বিক্ষোভ করেন। এলাকাবাসী ও মরা গরুর মাংস ক্রেতা হুমায়ূন, বেলাল হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, রেজাউল করিম ও জয়নাল আবেদীনসহ আরো অনেকেই জানান, ‘রোজা উপলক্ষে প্রায় এক লাখ টাকার মূল্যের একটি গরু জবাই হবে বলে মাইকিং করে প্রচার করেন ফেরদৌস ও সাঈদ মিয়া। পরে সেখান থেকে আমরা প্রতি কেজি ২০০ টাকা দরে ৫, ৭ এবং ১০ কেজি করে মাংস ক্রয় করি। শুক্রবার বিকেলে জানতে পারি, গরুটি মরা ছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে গরুটি কি কারণে মারা গেছে এ নিয়ে আমরা চিন্তিত। কেন আমাদের মরা গরুর মাংস খাওয়ানো হলো এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
ধনবাড়ী পৌরসভার ছয় নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম তোতা জানান, শুক্রবার এলাকাবাসীর নিকট জানতে পারি গত সোমবার রাতে মরা গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করা হয়েছে। এই জঘন্য ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন তিনি। স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম তোতা জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। প্রকৃত দোষীদের কঠিন বিচার হওয়া দরকার। যাতে করে এমন ঘটনা আর কেউ ঘটাতে না পারে।
ধনবাড়ী থানার ওসি চাঁন মিয়া জানান, ঘটনা শোনার পরপরই আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। পুলিশ ঘটনায় জড়িতদের বাড়িতে গিয়ে পায়নি। তাঁরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ব্যাপারে ধনবাড়ী পৌর মেয়র খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন বলেন, ‘আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ঘটনাটি ইউএনও মহোদয় ও ওসি সাহেবকে জানিয়েছি।’
ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা সিদ্দিকা জানান, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে।সূত্র:আমার প্রাণের বাংলাদেশ
Facebook Comments