প্রকাশিত সময় : মে, ১১, ২০২০, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ
পাঠক দেখেছেন 700 জননানা প্রতিকূলতার মধ্যেও উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে হবিগঞ্জের চা বাগানগুলো। সময়মতো বৃষ্টি না হলেও ১৫ মার্চ থেকে উৎপাদন শুরু হয়। কিন্তু করোনাকালের মধ্যে হবিগঞ্জের বাগানগুলোতে চা পাতার বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এ কারণে বাগান কর্তৃপক্ষ বেকায়দার পড়েছেন। বাগানের একমাত্র আয়ের পথ চা পাতার বিক্রির অর্থ। এ অর্থে পুরো বছর পরিচালনা করতে হয় বাগান। পরিচালনা করতে গিয়ে দিতে হয় শ্রমিকদের বেতন, রেশন, উৎসব ভাতা, চা গাছের পরিচর্যায় সার ও কীটনাশকসহ যাবতীয় খরচ।
করোনা পরিস্থিতিতে বালিশিরা ও লস্করপুর ভ্যালির আওতাধীন হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের দেউন্দিসহ ২৪টি, বাহুবলের ১০টি, নবীগঞ্জের দুটি ও মাধবপুর উপজেলার পাঁচটি বাগানের ব্ল্যাক ‘টি’ উৎপাদন চলছে।
প্রতি মৌসুমে হবিগঞ্জের বাগানগুলো প্রায় ১ কোটি কেজি চা-পাতা উৎপাদন করে থাকে। নতুন করে চারা রোপণ করে চা-পাতার উৎপাদন বাড়ানোর জন্য বাগান কর্তৃপক্ষ নানাভাবে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। নিয়মমাফিক বৃষ্টির সঙ্গে রয়েছে চা-পাতা উৎপাদনের সম্পর্ক। অতি বৃষ্টি হলে হবে না। নিয়ম অনুয়ায়ী বৃষ্টির সঙ্গে উৎপাদনের ভালো-মন্দ নির্ভর করে। এছাড়াও চা-পাতার উৎপাদন বাড়াতে বাগান কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শ্রমিকদের আন্তরিকতা বিরাট ভূমিকা রাখে।
মাধবপুর উপজেলার সুরমা চা-বাগানের ব্যবস্থাপক আবুল কাশেম বলেন, বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। গাছে গাছে কুঁড়ি গজাচ্ছে। শ্রমিকরা আন্তরিকতার সঙ্গে গাছ থেকে পাতা সংগ্রহ করছে। ফ্যাক্টরিতে নিয়ে এসে প্রক্রিয়াজাত করে চা পাতার উৎপাদন করা হচ্ছে।
কিন্তু উৎপাদন হলেও চা পাতা বিক্রি বন্ধ আছে। নিলাম না হলে অর্থ আসবে না। অর্থ না পেলে বাগান পরিচালনা করা কঠিন। অর্থাভাবে চা গাছে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। এসব প্রয়োগ করলে গাছে গাছে আরও ব্যাপকভাবে কুঁড়ি গজাবে। শ্রমিকদের বেতন ভাতা দিতে হয় নিয়মিত।
তিনি বলেন, আমাদের মতো জেলার সব বাগানেই একই অবস্থা বিরাজ করছে। শুধু উৎপাদন করে রেখে দিলে হবে না। বিক্রি করতে হবে। এ অর্থেই চলবে বাগান। এনিয়ে তারা কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।
তিনি আরও বলেন, গড়ে ২৫ দশমিক ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত চাই। না হলে হবে না। চা বাগানে এখন সবুজ জেগে উঠেছে। যা দৃষ্টি ও হৃদয়কে দারুণভাবে মুগ্ধ করছে। এভাবে বৃষ্টিপাত হলে, চা-পাতা উৎপাদনে সহায়ক হবে। এরজন্য তাপমাত্রা চাই ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
শ্রমিক নেতা কাঞ্চনপাত্র বলেন, করোনার মধ্যে শ্রমিকরা জীবনবাজি রেখে চা পাতা উৎপাদনে যুক্ত রয়েছে। এখানে উৎপাদিত চা পাতা বিক্রি না হলে মালিকরা কিভাবে শ্রমিকদের বেতন থেকে শুরু বাগান পরিচালনা করবেন। এ ব্যাপারে তিনি সরকারের দৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।
শ্রমিকরা জানান, বছর পর বছর ধরে গাছ থেকে চা-পাতা সংগ্রহ করছি। এটা আমাদের কাছে নতুন কিছু নয়। সব একই রকম লাগে। তবে বৃষ্টির পরে যে কুঁড়িগুলো বের হয় তা চকচকে সবুজ থাকে।
তিনি জানান, শুকনো মৌসুমে চা-গাছের ওপরের অংশ কাটা হয়েছে। নিয়মিত বৃষ্টি পেয়ে গাছে কুঁড়ি ছাড়তে শুরু করে। যে চা গাছের কুঁড়িগুলো অন্যগুলোর থেকে বেশি বড় হয়ে গেছে, সেগুলোকে ইতোমধ্যে তোলা হয়ে গেছে। এভাবে উত্তোলন চলছে। কিন্তু উৎপাদিত পাতা বিক্রি না হলে সবার জন্য বিরাট সমস্যা।সূত্র.রাইজিংবিডি
Facebook Comments